মৎস্য চাষ সংক্রান্ত প্রচলিত ধ্যান-ধারণা (Conventional idea regarding fish culture)
মৎস্য চাষ বা মাছ চাষ বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রচলিত তিনটি পরিভাষা (term) যথা-অ্যাকোয়াকালচার (Aquaculture), ফিশারি (Fishery) এবং পিসিকালচার (Pisciculture) সম্পর্কে আলোকপাত করা হল।
• 1. অ্যাকোয়াকালচার (Aquaculture) বা জলনির্ভর চাষ :
অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ জলজ জীবদের (উদ্ভিদ এবং প্রাণী) বিজ্ঞানসম্মত, স্বাস্থ্যসম্মত, নিয়ন্ত্রিত প্রতিপালন, আহরণ এবং সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে অ্যাকোয়াকালচার বা জলনির্ভর চাষ বলা হয়। এই প্রকার চাষে নানাবিধ মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, গেঁড়ি, গুগলি, ঝিনুক প্রভৃতি প্রাণীসহ জুপ্ল্যাঙ্কটন (প্রণীকণা) এবং বিভিন্ন ধরনের শৈবাল, ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন (উদ্ভিদকণা) প্রভৃতি জলজ উদ্ভিদও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
• 2. ফিশারি (Fishery) বা মাছ চাষ : মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহৃত অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ জলজ প্রাণীদের বিজ্ঞানসম্মত, স্বাস্থ্যসম্মত, নিয়ন্ত্রিত প্রতিপালন, আহরণ এবং সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে ফিশারি বা মাছ চাষ বলা হয়। এই প্রকার চাষে বিভিন্ন মেরুদণ্ডী মাছ (Pisces) ছাড়াও অমেরুদণ্ডী জলজ প্রাণীদের যেমন— চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
• 3. পিসিকালচার (Pisciculture):
এই ধরনের প্রতিপালনে Pisces অর্থাৎ মৎস্যজাতীয় মেরুদণ্ডী প্রাণী যেমন— অস্থি বিশিষ্ট মাছ (শ্রেণি : অসটিকথিস) এবং তরুণাস্থি বিশিষ্ট মাছেদের (শ্রেণি : কনড্রিকথিস) অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, বর্তমানে মাছ চাষ ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত। মানুষের খাদ্য উপযোগী এবং অন্যান্য অর্থকরী প্রয়োজনে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার ‘Fin Fish' (রুই, কাতলা, মৃগেল, ভেটকি ইত্যাদি) এবং ‘Shell fish' (চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক প্রভৃতি) দের নিয়ে চাষ ফিশারিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সুতরাং ব্যাপক অর্থে খাদ্যযোগ্য ও অর্থকরী সম্পর্কিত জলজ প্রাণীদের বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রজনন হার বৃদ্ধির প্রচেষ্টা সহ প্রতিপালন, বিবেচনাপ্রসূত সংগ্রহ এবং সংরক্ষণকে মাছ চাষ বা ফিশারি বলা হয়ে থাকে।