Types of Fishery

ফিশারির প্রকার
(Types of Fishery)

A. ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে (On the basis of management) 
                                                      ফিশারি দুই প্রকার হয়ে থাকে। যেমন (i) মাছ ধরা ভিত্তিক ফিশারি বা ক্যাপচার ফিশারি ( Capture fishery) এবং (ii) মাছ চাষ ভিত্তিক ফিশারি বা কালচার ফিশারি (Culture fishery)।

(i) যে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পাহাড়ি জলাশয়, নদ, নদী, মোহনা, সমুদ্র প্রভৃতি বৃহৎ জলাশয় থেকে বিবেচনাপ্রসুতভাবে মাছ ধরা হয় তাকে ক্যাপচার ফিশারি বলে। ভবিষ্যতে মৎস্য সংরক্ষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত না হয় এবং সংশ্লিষ্ট জলজ সম্পদের (Planktons) ঘাটতি না ঘটে সেইদিকে নজর রেখে মাছ ধরা কাজটি সম্পন্ন করা হয়। এই উদ্দেশ্যে এমন আকারের জাল (net) ব্যবহার করা হয় যাতে অপেক্ষাকৃত ছোটো আকারের মাছ ও তাদের খাদ্যকণা আহরণ থেকে বিরত থাকা যায়।

(ii) কালচার ফিশারি : তুলনামূলকভাবে ছোটো আকারের এবং বদ্ধ জলাশয় যেমন— পুকুর, ডোবা, দীঘি, বিল ইত্যাদিতে চাষযোগ্য মাছেদের প্রতিপালন, আহরণ এবং সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। কালচার ফিশারি মারফত বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে চাষযোগ্য দেশজ (endemic) এবং বিদেশাগত (exotic) মাছেদের প্রতিপালন সম্ভব। সুতরাং মাছচাষে কালচার ফিশারির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

B. আবাসস্থলের (habitat) উপর নির্ভর করে মাছচাষকে (i) অন্তর্দেশীয় (Inland) এবং (ii) সামুদ্রিক (Marine) – এই দুই ধারায় ভাগ করা হয়েছে।

(i) অন্তর্দেশীয় মাছ চাষ (Inland fishery) : পূর্বে বলা হয়েছে মাছ চাষে কালচার ফিশারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ভারতে বিস্তৃত সুবিশাল অন্তর্দেশীয় জলাশয় (পুকুর, হ্রদ, দীঘি, নদ, নদী, মোহনা, ভেড়ি প্রভৃতি) থেকে যে পরিমাণ মাছ উৎপাদন হয় তাহা সমুদ্র থেকে আহরিত মাছের থেকে অনেক বেশি।

আবাসস্থলে জলের রাসায়নিক প্রকৃতি অনুসারে অন্তদেশীয় মাছচাষের উপবিভাগ নিম্নরূপ



অন্তর্দেশীয় মাছ চাষ (Inland fishery) 

  1. স্বাদু জলের মাছ চাষ (Freshwater fishery)
  2.  অল্প লবণাক্ত জলের মাছচাষ (Brackish water fishery)
  3. নদ-নদীতে মাছ চাষ (Riverine fishery
  4. পুকুরে মাছ চাষ(Ponds fishery)
  5. হ্রদ ও বৃহৎ জলাশয়ে মাছ চাষ (Lake & large riverine fishery)
  6. মোহনা বা খাঁড়িতে(Estuary)

(ii) সামুদ্রিক মাছ চাষ (Marine fishery) : সমুদ্রে কখনো মাছ চাষ করা হয় না। সমুদ্র থেকে মাছ ও অন্যান্য জীবদের আহরণই সামুদ্রিক মাছ চাষ রূপে চিহ্নিত। অপর কথায়, সমুদ্র থেকে মাছ ধরাকে আহরণভিত্তিক মাছ চাষ বা ক্যাপচার ফিশারি (Capture fishery) বলা হয়।
সমুদ্রে মাছ ধরার সাফল্য নির্ভর করে উন্নত প্রযুক্তির সামুদ্রিক জলযান, মাছধরার আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রভৃতির ওপর। সামুদ্রিক পরিবেশ ও অঞ্চলভেদে উপকূলবর্তী মাছ চাষ (Coastal fishery), উপকূল দূরবর্তী মাছ চাষ (Offshore fishery), গভীর সমুদ্রে মাছ চাষ (Deep sea fishery) ইত্যাদি নামকরণ করা হয়েছে।

উপকূলবর্তী ফিসারিজ (Coastal fisheries): সমুদ্র-তীরবর্তী অঞ্চল (coast) থেকে মহাদেশীয় তাক (continental shelf) জুড়ে উপকূলবর্তী ফিসারিজ বিস্তৃত। উপকূল থেকে আরম্ভ করে প্রায় 30 মিটার গভীরতা পর্যন্ত ব্যাপ্ত অঞ্চল সহযোগে এই ধরনের ফিসারিজ গঠিত। ভারতের অন্তর্গত প্রধান দুটি সাগর যথা—পূর্বে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম আরব সাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে মাছ ও অন্যান্য জীব আহরণ করা হয়ে থাকে। অন্ধ্রপ্রদেশ, ওডিশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূল নিয়ে পূর্ব উপকূল গঠিত। অন্যদিকে কেরল, মালাবার, মান্নার, পক প্রণালী, চেন্নাই, মুম্বই, গুজরাট প্রভৃতি নিয়ে পশ্চিম উপকূল গঠিত। এই সকলউপকূলে প্রায় 12,000 মাছ সংগ্রহ কেন্দ্র (landing ground) গড়ে উঠেছে। পূর্ব উপকূল অপেক্ষা পশ্চিম উপকূল থেকে ধৃত মৎস্য সম্পদের পরিমাণ অনেক বেশি। কারণ— পূর্ব উপকূলের তুলনায় পশ্চিম উপকূল অনেক বেশি বিস্তৃত, মাছের খাদ্য সম্ভারের (জু ও ফাইটোপ্ল্যাক্টন) প্রাচুর্যতা এবং সামুদ্রিক জলস্রোত ও দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রাবল্য। সমীক্ষায় দেখা গেছে ভারতের সামুদ্রিক মাছ সংগ্রহের প্রায় 75% আসে পশ্চিম উপকূল তথা আরব সাগর থেকে।

ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল থেকে ধৃত মৎস্য সম্পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – হাঙ্গর (Scoliodon sp.), শংকর মাছ (Trygon sp.), করাত মাছ (Pristis sp.), ইলেকট্রিক রে (Torpedo sp.), স্কেট (Raja sp.), সার্ডিন (Sardinella sp.), ম্যাকারেল (Rastrelliger sp.), বম্বে ডাক (Harpodon sp.), পমফ্রেট (Stromateus sp.), রিবন মাছ (Trichurius sp.), ইলিশ (Tenualosa sp.) প্রভৃতি।

উপকূল দূরবর্তী এবং গভীর সামুদ্রিক ফিসারিজ (Offshore and deep sea fisheries) : মহাদেশীয় তাকের (Continental shelf) পরবর্তী সমুদ্রের অঞ্চল এবং গভীর সমুদ্রের (প্রায় 40 মিটার) বিস্তীর্ণ অঞ্চলের উপরিতলে, মধ্য-তলে এবং নিম্ন-তলে বিচরণরত মৎস্য সম্পদ আহরণ করার মাধ্যমে এইরূপ ফিসারিজ গড়ে উঠেছে। ওই সব অঞ্চল থেকে আহরিত উল্লেখযোগ্য মাছ হল— বিভিন্ন প্রজাতির হাঙ্গর, ভারতীয় স্যামন, সিলভার বেলি, রন্ডা, ডারা, ইল, পমফ্রেট, ঘোল, কর্করা, কুঠ প্রভৃতি।

Shaharuk Islam

Hi I am Shaharuk Islam. I enjoyed in writing articles and spread knowledge cross over the internet.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

Ad

Magspot Blogger Template

Ad

amazon.in
amazon.in

نموذج الاتصال