পুকুর তৈরীর নিয়ম (Rules for making ponds)

পুকুর তৈরীর নিয়ম


মাছ চাষের বিভিন্ন বিষয়


মৎস্য চাষ করতে হলে, এবং চাষে সাফল্য অর্জন করতে কতকগুলি প্রয়োজনীয় বিষয় জানার দরকার। মৎস্যজীবী ভাইদের সেই সব বিশেষ প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি জেনে রাখলে চাষে সাফল্য অর্জন করা যায়। এই জন্য এখানে তার বিবরণ দেওয়া হল।



মৎস্য চাষ করতে হলে, প্রথমেই পুকুরটিকে চাষ যোগ্য করে তুলতে হবে। পুকুর তৈরী করার জন্য যে সব দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেগুলি হলো—(১) জঞ্জাল পরিষ্কার, (২) পাঁক তুলে ফেলা, (৩) পাড় বাঁধানো বা ঠিক করা, (৪) বাজে মাছ সরানো, (৫) জলের প্লাংক্টন পরীক্ষা করা, (৬) পি. এইচ বা জলের অম্লতা পরীক্ষা, (৭) চূণ ও সার দেওয়া, (৮) পোকামাকড় ও মাছের ক্ষতিকারক বস্তু ধ্বংস করা।

জঞ্জাল পরিষ্কারের উপকারিতা


জলের মধ্যেই হোক বা বাইরের জঙ্গলেই হোক, এগুলি মাছের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। পুকুরে জলজ উদ্ভিদ থাকলে মাছের বৃদ্ধির পক্ষে ও তাদের সঞ্চরণ করার পক্ষে অসুবিধা হয়ে দাঁড়ায়। শুধু তাই নয়, জাল টানার সময়ও অসুবিধার সৃষ্টি হয়। তা ছাড়া এতে ডিম পোনার খাদ্য উৎপাদনে বাধা হয়। আবার বাইরের অর্থাৎ পাড়ের জঙ্গলগুলির পোকা মাকড় জলে পড়ে পুকুরের ডিম পোনা থেকে শুরু করে ধানী পোনা পর্যন্ত খেয়ে ফেলে। সেজন্য প্রথমেই জঙ্গল সাফ করতে হবে।



পাঁকের অসুবিধাকুরে বেশী পাঁক থাকলে তুলে ফেলতে হবে। তার জন্য বেশী পাঁক থাকলে জল সেঁচে শুকনো করে পাঁক টেনে তুলতে হবে। কারণ পাঁকে দূষিত গ্যাস জন্মায়। এই গ্যাস শুধুডিম পোনার পক্ষে মারাত্মক ক্ষতি করে। সেজন্যে শুকনো পুকুরে লাঙল দিয়ে সমস্ত মাটি ওলট-পালট করে দিতে হয়।

পাড় বাঁধতে হবে কেন?


যদি পুকুরের পাড় বর্ষায় বা বন্যায় ভেঙে যায়, তাহলে সেটি ভাল করে বেঁধে দিতে হবে। কাছাকাছি অন্য কোন পুকুরের সঙ্গে যেন বিন্দুমাত্র যোগ না থাকে, কারণ যোগ থাকলে আগাছা ও মাছ খেকো প্রাণী অন্য পুকুর থেকে পুকুরে ঢুকে সব ডিম পোনা খেয়ে ফেলবে।


আঁতুড় পুকুরে অন্য প্রাণী বা মাছের অপকারিতা


যে মনোমত পুকুর তৈরী করতে চাইছি, সেই পুকুরকে আঁতুড় পুকুর (Nursing Tank) বলা হয়। ডিম পোনা ছাড়ার আগে আঁতুড় পুকুরে সব মাছ, ব্যাঙ, পোকামাকড় ধ্বংস করতে হবে। শুধু মৎস্যভুক শাল, বোয়াল, শোল মাছই নয়, সব প্রকারের চুনো, চাঁদা, মৌরোলা, পুঁটি, এমনকি কাতলা, রুই, মৃগেল, কালবোস প্রভৃতি মাছের চারা পোনা থাকাও উচিত নয়। তার কারণ, নরম ডিম পোনা ঐ সব প্রাণীর প্রিয় খাদ্য। কাজেই শত্রু শেষ করেই ডিম পোনা চাষ করতে হবে।


আগাছা ধ্বংসের উপায়


অনেক সময় বার বার জাল টেনেও শত্রু অর্থাৎ মাছের শত্রু ধ্বংস করা সম্ভব হয় না। সেজন্যে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে আগাছা ধ্বংস করতে হবে। রাসায়নিক বিষের ক্রিয়া অনেকদিন থাকে এবং উৎপাদনের পক্ষে ক্ষতিকারক। মহুয়ার খোল ওদিক থেকে বই উপকারী। কারণ মহুয়ার খোল প্রথমে বিষের ন্যায় কাজ করে। কিন্তু শেষে সারের কাজও করে। কাজেই নিশ্চিন্তভাবে এই খোল ব্যবহার করা যায়  আথবা ক্লিনার ব্যাবহার করুন।


মহুয়ার খোল দেবার নিয়ম


মহুয়ার খোল পুকুরে দিতে হলে, তার পরিমাণ হল প্রতি হেক্টরে ২৫০০ কেজি অথবা প্রতি একরে ১০০০ কেজি প্রতি মিটার আনুমানিক ৩ ফুট জলের গভীরতার জন্য মহুয়ার খোল ছড়িয়ে দেবেন। এইটাই নিয়ম ও পরিমাণ। পুকুরে মহুয়ার খোল দেবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব মাছ ভাসতে শুরু করে। এবার জালের সাহায্যে মাছ তুলে নিন। চিন্তা না করে সব মাছ বাজারে চালান দিতে পারেন। মাছ বিষাক্ত হবে না, এবং এই মাছ খেয়ে কারও ক্ষতিও হবে না। মহুয়ার খোল বিন্দুমাত্র মানুষের ক্ষতি করে না।
যদি পুকুরের গেঁড়ি-গুগলি শামুক খুব বেশী পরিমাণে থাকে তাহলে মাছ খুব একটা বাড়ে না। এবং স্বাভাবিক চুণের উৎস এদের উপস্থিতির ফলে কমে যায়। মহুয়ার খোল দিলে এরাও মরে যায় অথবা জলের ধারের দিকে চলে আসে, সেই অবস্থায় এগুলি তুলে ফেলা খুব সহজ হয়। মহুয়া খোল পুকুরে দিলে তার বিষক্রিয়া ১০/১৫ দিন থাকে। এটি যে কোনও রাসায়নিক বিষ থেকে নিরাপদ এবং অল্প সময় এর ক্রিয়া থাকে। 

শুকনো পুকুরে মহুয়ার খোল দেবার নিয়ম


শুকনো পুকুরে মহুয়ার খোল দেওয়া চলে না, কিন্তু বর্ষাকালে অন্য যে কোন জলাশয়ের বা পুকুরের জল যদি প্রবেশ করে ও তার সঙ্গে মাছও এসেছে বলে মনে হয়, তবে সেই সব ক্ষেত্রে মহুয়ার খোল ব্যবহার করতে হবে। শুকনো পুকুর হলে অগভীর লাঙ্গল দিয়ে রাখবেন ও চূণ দেবেন। তারপর যখন বর্ষার জল জমবে তখন সার দিতে হবে।

চূণ দেবার উপকারিতা


চূণ সব পুকুরেই দেওয়া ক্ষতিকারক নয়, উপরন্তু ভালই বলা যায়। বিশেষ করে আঁতুড় পুকুরে দিতেই হবে। চূণের অনেকগুলি গুণ আছে। চূণের দ্বারা পুকুরের সমস্ত বিষাক্ত গ্যাস নষ্ট হয়। ধানী পোনা থেকে চারা পোনা সব মাছের বৃদ্ধি, বিশেষ করে হাড়, দাঁত, আঁশ প্রভৃতির বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পুকুরের স্বাভাবিক উৎপাদন শক্তি বৃদ্ধি করে তোলে।


চূণ দেবার নিয়ম 

সার দেবার আগে চূণ দিতে হবে। যদি আঁতুড় পুকুরে - চূণ দিতে হয়, তাহলে হেক্টর প্রতি ২০০ ৩০০ কজি এবং একর প্রতি থেকে ১২০ কেজি দিতে হবে, সব থেকে ভালো হয় যদি কলিচূণ দিতে পারেন। তাহলে কম পরিমাণ দিতে পুকুরে বেশী জল থাকলে ওপর থেকে ছিটিয়ে দেবেন।

চূণ দেবার পর কি সার দেবেন? আঁতুড় পুকুরে টাটকা গোবর সার দেওয়া সবচেয়ে ভালো। যদি আগে মহুয়া খোল দেওয়া থাকে তাহলে হেক্টর প্রতি ৫০০০ কেজি গোবর সার দেবেন এবং একর প্রতি ২০০০ কেজি। অন্যথায় ১০,০০০ কেজি পর্যন্ত গোবর সার দেওয়া যেতে পারে।

প্রয়োজনে  আমাদের  হ্যাচারিতে যোগাযোগ করতে পারেন,আমাদের হ্যাচারীতে পুকুরচাষের  যাবতীয় ডিমপোনা   ও চারাপোনা পাওয়া যায়। 

 যোগাযোগের  টীকানা      


পেটলাবাজার      
থানা- দিনহাটা, 
জেলা-কুচবিহার 
ফোন- ৮৩৪৩৮৮৯৪২৪(মিটু)
৮৫১৪০২৯১৫৪(মিলু)
৭৫৫০৮৭২৪৮৪(শাহারুক)


    

Google map 

                       









মাছ চাষের জন্য page টি follow করুন
                                           
ধন্যবাদ  

   


Shaharuk Islam

Hi I am Shaharuk Islam. I enjoyed in writing articles and spread knowledge cross over the internet.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

Ad

Magspot Blogger Template

Ad

amazon.in
amazon.in

نموذج الاتصال