আঁতুড় পুকুরে সবুজ কণা বেশী হলে নিয়ন্ত্রণের উপায়
সবুজকণার নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন সূর্যের আলো। অতএব আঁতুড় পুকুরে যদি সূর্যের আলো না পড়ে তাহলে সবুজকণার বৃদ্ধি কমে যাবে। এবং কণাগুলি মরে যাবে। কাজেই সবুজকণা আঁতুড় পুকুরে বন্ধ করতে হলে অর্থাৎ সবুজকণা ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ালে সুজি পানা বা তেপাতি পানা দিয়ে এক সপ্তাহ আঁতুড় পুকুরে ছেড়ে রাখতে হবে। তাহলে সবুজকণা নষ্ট হয়ে প্রাণিকণা বেড়ে যাবে।
![]() |
জলে সবুজ কণা |
সবুজ বা তেপাতি পানার পরিমাণ
গোবর সার দেবার পর ১৫ থেকে ২০ দিন প্রচুর প্রাণিকণা জন্মায়। প্রথমে অবশ্য কিছু উদ্ভিদকণা জন্মায়, কিন্তু তারপরেই জন্মাতে শুরু করবে প্রাণিকণা। এই প্রাণিকণাগুলি হলো সব রকমের কার্প জাতীয় মাছের ডিম পোনাদের খুবই প্রিয় খাদ্য। স্বাভাবিকভাবেই অতি সহজেই ১৫-১৬ দিন পরে পুকুরে ডিম পোনা ছাড়বেন। কিন্তু ডিম পোনা ছাড়ার আগে দেখে নিতে হবে পুকরে ঠিকমত খাদ্যাণু অর্থাৎ উদ্ভিদকণা এবং প্রাণিকণা জন্মেছে কিনা।
খাদ্যাণু জন্মানোর পরীক্ষা
পুকুরের জলের বর্ণ যদি কালচে লাল বা বাদামী হয়, তাহলে বুঝবেন পুকুরে
স্বাভাবিক খাদ্যের পরিমাণ ভালোই হয়েছে। পরীক্ষার জন্য হাত মুঠো করে কনুই পর্যন্ত হাত সোজাভাবে ডুবিয়ে দিন। যদি ওপর থেকে দেখা যায়, তাহলে জানতে হবে পুকুর খাদ্যের পরিমাণ ভালোই হয়েছে।
প্লাংক্টন জালের দ্বারা পরিমাণ নির্ণয়
এই নিরূপন করা আর একটি সহজ উপায় হলো প্লাংক্টন জালের সাহায্যে খাদ্যাণু অর্থাৎ প্লাংক্টন পরিমাপ করা। এই জালে ৫০ লিটার পুকুরের জল, এই জল এক জায়গা থেকে নিলে চলবে না, পুকুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে নিতে হবে। এইভাবে জল নিয়ে, ছেঁকে দেখলে দেখবেন—জলের কাঁচনলে অনেক খাদ্যাণু জন্মেছে।
পরীক্ষার ফল
(১) প্রথমত জলের রং বাদামী হলে এবং কাচনলের ভেতরকার জিনিস ছটফট করছে দেখলে বুঝবেন বেশ ভালোভাবেই ডিম পোনার উপযুক্ত খাদ্য জন্মেছে।
(২) যদি কাঁচনলে জলের বর্ণ সবুজ হয়, তাহলে বুঝবেন, প্রচুর উদ্ভিদকণা জন্মেছে। এবার ঐ কাঁচনলে কিছুটা নুন দিয়ে দেখুন, তাহলে দেখবেন সব কণা মরে তলানি হয়ে কাঁচনলের নিচে জমে যাবে।
তলানির পরিমাণ যদি একশিশি হয় তাহলে বুঝতে হবে খাদ্যকণা ভালোই জন্মেছে। যদি দু’শিশি হয় তাহলে অত্যধিক জন্মেছে। পরীক্ষা করতে হলে ভোরে সূর্য ওঠার আগেই করতে হবে।