শ্বসনের গুরুত্ব বা তাৎপর্য (Significance or importantce of respiration) :
● শক্তির মুক্তি :
সালোকসংশ্লেষের সময় সৌরশক্তি উৎপন্ন খাদ্যের মধ্যে স্থৈতিক শক্তি রূপে আবদ্ধ হয়। শ্বসনকালে খাদ্যস্থ স্থৈতিক শক্তি তাপ শক্তি বা গতি শক্তি রূপে মুক্ত হয়ে জীবদেহের বিভিন্ন জৈবিক ক্রিয়াগুলিকে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
● শক্তির রূপান্তর : জোনাকি এবং কোনও কোনও সামুদ্রিক প্রাণীর দেহ থেকে যে আলো বিকীর্ণ হয় তা শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন শক্তির রূপান্তর। ইলেকট্রিক-রে নামে এক রকম মাছের দেহ থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, তাও শ্বসনের ফলে উৎপন্ন শক্তির রূপান্তর। স্তন্যপায়ী ও পক্ষীশ্রেণীর প্রাণীদের রক্তকে গরম রাখতে সাহায্য করে শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন তাপ শক্তি।
3. বায়ুর অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের সমতা : সালোকসংশ্লেষ ও শ্বসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের সমতা বজায় থাকে। সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় সবুজ উদ্ভিদ বায়ু থেকে CO2 গ্রহণ করে এবং O2 বর্জন করে, ফলে বায়ুমণ্ডলের CO2 গ্যাস হ্রাস পায় এবং O2 গ্যাস বৃদ্ধি পায়। শ্বসন কালে জীব O2 গ্রহণ করে এবং CO2 বর্জন করে বায়ুতে ওই গ্যাস দুটির সমতা বজায় রাখে।
■ নীচের ছকে বিভিন্ন প্রাণীর শ্বাস অঙ্গের নাম দেখান হল:
- প্রাণীর নাম শ্বাস অঙ্গ
- 1. অ্যামিবা, স্পঞ্জ, হাইড্রা দেহতল
- 2. কেঁচো, জোঁক দেহত্বক
- 3. পতঙ্গ (আরশোলা, ফড়িং) ট্রাকিয়া
- 4. চিংড়ি বই-ফুলকা (বুক-গিল)
- 5. মাকড়সা বই-ফুসফুস (বুক-লাং)
- 6. মাছ ফুলকা
- 7. ব্যাঙ ফুসফুস, ভিজে ত্বক, মুখবিবর ও গলবিলীয় মিউকাস পর্দা
- ৪. ব্যাঙাচি বহিঃফুলকা ও অন্তঃফুলকা
- 9. সরীসৃপ : টিকটিকি, গিরগিটি, সাপ ফুসফুস
- 10. পক্ষী—পায়রা, ময়ূর ফুসফুস
- 11. স্তন্যপায়ী মানুষ, তিমি, বাদুড় ফুসফুস