পর্তুগীজ নাবিকদের নেতৃত্বে সামুদ্রিক অভিযান:
১৫শ শতাব্দীর শুরুর দিকে পর্তুগীজরা সামুদ্রিক অভিযানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। তাদের অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল:
- পূর্ব দেশের মশলার ব্যবসায়ীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন: মধ্যযুগে ইউরোপে মশলার চাহিদা ছিল প্রচুর। পর্তুগীজরা মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম ব্যবসায়ীদের উপর নির্ভরশীল না হয়ে সরাসরি পূর্ব দেশ থেকে মশলা আমদানি করতে চাইত।
- খ্রিস্টধর্ম প্রচার: পর্তুগীজরা খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যেও নতুন নতুন দেশ আবিষ্কার করতে চাইত।
- সোনার সন্ধান: পর্তুগীজরা বিশ্বাস করত পূর্বে প্রচুর পরিমাণে সোনা পাওয়া যায়।
পর্তুগীজদের সামুদ্রিক অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি:
- ১৪১৫ সালে: পর্তুগীজরা সেউটা দখল করে।
- ১৪৮৮ সালে: বারথোলোমিউ ডায়াজ আফ্রিকার দক্ষিণতম বিন্দু 'কেপ অফ গুড হোপ' আবিষ্কার করেন।
- ১৪৯৮ সালে: ভাস্কো দা গামা সমুদ্রপথে ভারতে পৌঁছান।
- ১৫০০ সালে: পেড্রো আলভারেস ক্যাব্রাল ব্রাজিল আবিষ্কার করেন।
- ১৫১১ সালে: আফোন্সো ডি আলبوكার্ক মালয় উপদ্বীপের 'মালাকা' দখল করেন।
পর্তুগীজদের সামুদ্রিক অভিযানের ফলাফল:
- পূর্ব দেশের মশলার ব্যবসায় পর্তুগীজদের একচেটিয়া কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
- খ্রিস্টধর্মের প্রসার ঘটে।
- পর্তুগীজরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করে।
- ইউরোপে নতুন নতুন জীব ও উদ্ভিদের পরিচয় ঘটে।
- ভৌগোলিক জ্ঞানের বৃদ্ধি ঘটে।
পর্তুগীজদের সামুদ্রিক অভিযানের সমালোচনা:
- পর্তুগীজরা উপনিবেশগুলিতে নির্যাতন ও লুণ্ঠন চালায়।
- অনেক স্থানীয় মানুষ রোগে ও দুর্ভোগে মারা যায়।
- পর্তুগীজদের আগমনের ফলে অনেক স্থানীয় সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যায়।
উপসংহার:
পর্তুগীজদের সামুদ্রিক অভিযান বিশ্ব ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই অভিযানের ফলে ইউরোপীয়দের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায় এবং বিশ্বায়নের সূচনা ঘটে।
তথ্যসূত্র:
[বাংলাপিডিয়া - পর্তুগীজদের সামুদ্রিক অভিযান]
Tags
ইতিহাস