![]() |
Hatchery |
ডিম পোনার চাষ
করলে চাষ পুকুরে ডিম
থাকবে না আর চাষির ঋণ
এবারে ডিম পোনার চাষ সম্বন্ধে আলোচনা করা যাক, কারণ ডিম পোনা চাষের বিষয় না জানলে ধানী পোনা বা বড়ো মাছ পাবেন কোথায়? জন্মাবে কিভাবে? সেজন্যে ডিম পোনা চাষ সম্বন্ধে এখানে আলোচনা করা হলো।
আপনার ঘরের আশেপাশে এঁদো ডোবা পাবেন, যাতে লতা-পাতা পড়ে পচে, গরু-বাছুর প্রভৃতি স্নান করায়। কেউ কেউ হয়তো খুব অসুবিধায় পড়লে কাপড় চোপড় ধোয়। সেই রকম এঁদো ডোবা মাছ চাষের জন্য বীজ তৈরীর কাজে লাগবে। এঁদো ডোবা বলে তাচ্ছিল্য করবেন না। ঐ এঁদো ডোবা থেকে আপনি বছরে হাজার টাকারও বেশী আয় করতে পারবেন। এখন দেখুন কী করে তা সম্ভব হবে।
এঁদো ডোবায় মাছ চাষ
চড়া দামের দিনে, বিশেষ করে বর্তমানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দিনে, কোনো জিনিস ফেলে রাখা ঠিক নয়। কাজেই, আপনিও এই এঁদো ডোবাটা তাচ্ছিল্য করে বা অগ্রাহ্য করে ফেলে রাখবেন না। ঐ এঁদো পচা ডোবাতে ডিম ফুটিয়ে পোনা তৈরী করে হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারেন। ডিম পোনা সংগ্রহের স্থান Fish production hatchery(petla) ph-7550872484/8343889424 https://goo.gl/maps/4PjuDt7eLAAYhJto8
রুই-কাতলা, মৃগেল, কালবোস প্রভৃতি যেসব মাছ বেশী বিক্রী ও কেনা হয়, অর্থাৎ কেনা-বেচা করা হয়। এইসব জাতের মাছগুলি কোন চাষি আথবা হ্যাচারী থেকে নিতে পারেন।
পুকুরে ডিম পোনা আনার নিয়ম
ডিম পোনা সংগ্রহ করার পর বড়ো বড়ো মাটির তৈরী হাঁড়িতে বা অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়িতে করে ট্রেনে, লরিতে, বাসে, গরুর বা ঘোড়ার গাড়িতে, জলপথে হলে নৌকোতে বা ভারের সাহায্যে মানুষের কাঁধে করে আপনার অঞ্চলের বাজারে বিক্রীর জন্য নিয়ে আসে। এতে বেশ কিছু ডিম পোনা মরে যায়। অনেক সময় ঐ ডিম পোনার আবার ব্যাপকভাবে মড়কও লাগে। ঐ মড়ক বা নষ্ট হবার থেকে রেহাই পেতে হলে, পলিথিন ব্যাগে অক্সিজেন ভরে তাতে ডিম পোনা আনলে এই নষ্ট হবার হাত থেকে বা মড়কের হাত থেকে রেহাই পাবেন।
পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার-এর নিয়ম
একটি টিনের মুখ কেটে তার মুখে ঢাকনা দিতে হয়। ঐ টিনের ভেতরের যতটা মাপ বা পরিমান, সেই মাপে পলিথিন ব্যাগ ভেতরে দিয়ে তার ভেতর ডিম পোনার জন্যে ৫/৬ লিটার নদীর জল বা বাঁধের জল ভরে নিতে হবে। তারপর ঐ ব্যাগে আধ বাটি ডিম পোনা ওজন প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার ডিম পোনা ঐ জলে রেখে অক্সিজেন দিয়ে ব্যাগের অবশিষ্ট অংশটা ভরিয়ে বেলুনের মতো শক্ত করে বেঁধে দেবেন। তারপর টিনের ঢাকাটি চাপা দিয়ে খুব সহজেই আপনি ২৪ ঘণ্টা থেকে ৩৩ ঘণ্টা পর্যন্ত কোনরকম জলবদল না করে আপনার নির্ধারিত জায়গায় নিয়ে যেতে পারেন। তাতে ডিম পোনার কোনও ক্ষতি হবে না।
ভাল ডিম পোনা
প্রণোদিত উপায়ের ডিম পোনা
বর্তমানে এই ডিম পোনার ঘোরানো ব্যাপারটি বেশ সহজ হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে হয়ত আরও সহজ হয়ে উঠবে। তখন আর ডিম পোনার জন্য আপনাকে কোনও ঝামেলায় পড়তে হবে না। এজন্য আপনি যেখানে প্রণোদিত উপায়ে ডিম পোনা তৈরী হয়, সেখান থেকে আপনার পছন্দমতো রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবোস মাছের ডিম পোনা খরিদ করুন। এখন নির্ভেজাল ডিম পোনা পাবার কথা শুনুন। পশ্চিমবঙ্গের যে কোনও সরকারি মাছ চাষের খামারে নির্ভেজাল ডিম পোনা পাবেন। জেনে রাখুন পশ্চিমবঙ্গের সরকারী মাছের খামার আছে তিনটি জেলায়। যেমন ২৪ পরগণা জেলার ব্যারাকপুরে, নদীয়া জেলার পলাশীতে, মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে ও আমাদের হ্যাচারিতে পাবেন
Fish Production Hachary
ডিম পোনার জন্য পুকুর নির্বাচন
আপনি ডিম পোনা উৎপাদনের জন্য প্রথমেই পুকুর নির্বাচন করবেন, এটিই হবে প্রথম কাজ। ডিম পোনা উৎপাদনের জন্যে চাই ছোটো খাটো অগভীর পুকুর। এই ধরণের পুকুরই ডিম পোনা উৎপাদনের পক্ষে শ্রেষ্ঠ। এই পুকুরের মাপ হবে ০.০৩ হেক্টর থেকে ০.০৭ হেক্টর। অর্থাৎ ০.075 থেকে ০.১৭৫ একর বা ১০ মিটার × ৩০ মিটার থেকে ২০ মিটার × ৩৫ মিটার। সব সময় মনে রাখতে হবে সাড়ে সাত বিঘায় এক হেক্টর হয়। পুকুরটি গভীরতায় হবে ১ মিটার থেকে ১.৫ মিটার অর্থাৎ ৩ থেকে ৫ ফুট। ঢালু ও গড়ানে যুক্ত দীর্ঘ আয়তাকার পুকুর হল উৎপাদনের পক্ষে উপযুক্ত এবং সুবিধাজনক। গরমের দিনে যেসব পুকুর শুকিয়ে যায়, সেইসব পুকুরই ডিম পোনার পক্ষে উপযুক্ত। কারণ গরমে শুকিয়ে যাবার ফলে এইসব পুকুরে পাঁক বা কাদা থাকে না বললেই চলে। যদিও কিছু কাদা বা পাঁক থাকে প্রচণ্ড গরমে সেই কাদা বা পাঁক শুকিয়ে যায়, সেই সঙ্গে অব্যবহার্য আবর্জনাও শুকিয়ে যায় এবং অন্যান্য কিছু দোষ থাকলেও তা নষ্ট হয়ে যায়।
আবার যেসব পুকুরে সারাবছর জল থাকে, সেইসব পুকুরেও ডিম ফোটানো যায়, তবে সেজন্যে কিছু পরিশ্রমের দরকার হয়। সেসব পুকুর সংস্কার করিয়ে নিতে হয়।
ডিম পোনা ছাড়ার পর পোকা হলে কি করতে হয়?
আপনি যখন ডিম পোনা ছাড়লেন তখন কিছু অসুবিধা ছিল না, কিন্তু ডিম পোনা ছাড়ার পর পুকুরে পোকা হলে, এ অবস্থায় কী করবেন। এখানে সই কথা আলোচনা করছি। ডিম পোনা ছাড়ার পর পোকা হলে পোনা উৎপাদন কমে যায় ও মাছচাষীর ভয়ানক ক্ষতি হয়। আবার এই সময় তেল-সাবান বা শুধু কেরোসিন দেওয়া উচিতও নয় এবং চলেও না।
এই পোকা তাড়ানোর উপায় হল, পোকাগুলিকে আলোর ফাঁদে ধরতে হবে। সমস্ত পুকুরটিতে মাঝে মাঝে খুঁটিতে লণ্ঠন বা হ্যাজাক জ্বালিয়ে দেবেন। এবার এই আলোর নিচে খোঁটা পুঁতে কলাগাছের ছোটো ছোটো ভেলা বা চারটে খোঁটা দিয়ে একটা ফাঁক রাখতে হবে। এই খোঁটার মাপ হবে ৩ থেকে ৩.৫ ফুট। এর মাঝে যে ফাঁক রাখবেন, তাতে কেরোসিন তেল ঢেলে রাখবেন। তবে লক্ষ্য রাখবেন, কেরোসিন তেল যেন কোনক্রমে বেরিয়ে জলে মিশতে না পারে, এর ফলে রাত্রে এই আলোর আকর্ষণে সব পোকা ঐ কেরোসিন তেলে এসে পড়ে মরে যাবে। এই নিয়ম পুকুরের ৭৫% হাঁস পোকা মারা হয়েছে, এমন প্রমাণ আছে।
আঁতুড় পুকুরে তৈরী ডিম ছাড়ার পরিমাণ ডিম পোনা যে পাত্রে আনবেন, সেই পাত্রটি বা পলিথিন ব্যাগটি পুকুরের জলে কিছুক্ষণ ভাসিয়ে রাখতে হবে। কারণ এতে পুকুরের জলের তাপ এবং পলিথিন ব্যাগের তাপ এক সময় এক হয়ে আসবে। তবে ভুলেও কখনও দুপুরের গরমে ডিম পোনা পুকুরে ছাড়বেন না। যখন দেখবেন ডিম পোনার পলিথিনের ব্যাগ এবং পুকুরের ব্যাগের তাপমাত্রা এক অর্থাৎ সমান হয়েছে সেই সময় ধীরে ধীরে ব্যাগটির মুখ খুলে দিয়ে আস্তে আস্তে ব্যাগের ডিম পুকুরের জলে ঢেলে দিতে হবে। যদি জল ও ব্যাগের তাপের সমতা না হয় এবং সেটা না দেখে হঠাৎ ডিম এনেই জলে ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে ডিম পোনা মরে যাবে।
আঁতুর পুকুরে এবার ডিম ছাড়তে হলে প্রতি হেক্টরে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ অর্থাৎ একর প্রতি ৬৮ লক্ষ ডিম পোনা ছাড়তে হবে। যদি পুকুরের খাদ্যকণার পরিমাণ বেশী থাকে তাহলেই উপরোক্ত পরিমাণ ডিম পোনা ছাড়বেন। যদি খাদ্য কণার পরিমাণ কম হয় ডিম পোনার পরিমাণও কম করতে হবে। এখানে যে ডিম পোনার কথা বলা হয়েছে, সেগুলি নিষিক্ত বা শুক্র দ্বারা নিষিক্ত ডিম জানবেন।
![]() |
কই মাছ |
পুকুরে স্বাভাবিক খাদ্য কম হলে উপায়
প্লাংক্টন জল দ্বারা পুকুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৫০ লিটার জল ছেঁকে নিয়ে যদি দেখা যায় স্বাভাবিক খাদ্যের কম বা ঘাটতি পড়েছে, তাহলে তার পরিপূরক খাদ্যের যোগান দিতে হবে। তা না হলে মাছের বাড় থাকবে না এবং মাছের প্রচুর ক্ষতি হবে। বড়ো বড়ো মাছগুলির সংখ্যাও কমে যাবে খুব ভালোভাবে সার প্রয়োগ করা পুকুরের খাবার এইসব ডিম পোনারা প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যেই খেয়ে শেষ করে দিতে পারে। এই সময়, পুকুরের জায়গাও কমে যায় অর্থাৎ প্রতি ডিম পোনা হিসাবে যে স্থান ছাড়া হয়েছিল সেইসব ধানীপোনা হবার ফলে প্রত্যেটি ধানী পোনা হিসাবে সেই স্থান অবশ্যই কমে গেছে। তাই এই সময় অনেক মাছচাষী ভাই জাল দিয়ে ধাড়ী পোনা অন্য পুকুরে চালান করে দেয়। ঐসব নতুন পুকুরগুলি আঁতুড় পুকুরের মতোই হয়। তার ফলে উৎপাদিত পোনার সংখ্যা অনেক বেশী পরিমাণে পাওয়া যায়।
খাদ্যের ঘাটতি মেটাবার জন্যে সরষে, বাদাম ও নারকোল প্রভৃতি খোলের গুঁড়ো এবং চালের গুঁড়ো সমান পরিমাণে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ঠিক একই সময়ে জলে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই খাদ্যের পরিমাণ যেন খুব সুক্ষ্ম হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে জলের ওপর অনেকক্ষণ ভেসে থাকতে পারে। এজন্যে খাদ্যগুলি খুব মিহি ছাঁকনীতে চেলে জলে দিলে ভালো কাজ হয়। খোল এবং চালের গুঁড়োর সঙ্গে একভাগ মাছের গুঁড়ো অর্থাৎ ফিসমিল মিশিয়ে দিতে পারেন।
পরিপূরক খাদ্যের পরিমাণ
- ১।ডিম আর সরিষার তেল ভাল করে মিশিয়ে পুকুরে ছড়িয়ে দিবেন।
- ২।বাজারে ডিম পোনার জন্য পাউডার পাওয়া যায়।
সরষে, বাদাম ও নারকোল প্রভৃতি খোলের গুঁড়ো এবং চালের গুঁড়ো সমান পরিমাণে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ঠিক একই সময়ে জলে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই খাদ্যের পরিমাণ যেন খুব সুক্ষ্ম হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে জলের ওপর অনেকক্ষণ ভেসে থাকতে পারে। এজন্যে খাদ্যগুলি খুব মিহি ছাঁকনীতে চেলে জলে দিলে ভালো কাজ হয়। খোল এবং চালের গুঁড়োর সঙ্গে একভাগ মাছের গুঁড়ো অর্থাৎ ফিসমিল মিশিয়ে দিতে পারেন।
(১) যেদিন ডিম পোনা ছাড়া হবে, সেদিন থেকে প্রথম ৫ দিন প্রতিদিন ২ কেজি ৮০০ গ্রাম প্রতি ১ লক্ষ পোনার জন্য দিতে হবে।
(২) ডিম পোনা ছাড়ার পর দ্বিতীয় ৫ দিন প্রতিদিন ৪ কেজি ২০০ গ্রাম প্রতি ১০ লক্ষ পোনার জন্য দিতে হবে।
(৩) ডিম পোনা ছাড়ার তৃতীয় ৫ দিন, প্রতিদিন ৫ কেজি ৬০০ গ্রাম হিসাবে প্রতি ১০ লক্ষ পোনার জন্য দিতে হবে।
প্রয়োজনে আমাদের হ্যাচারিতে যোগাযোগ করতে পারেন,আমাদের হ্যাচারীতে পুকুরচাষের যাবতীয় ডিমপোনা ও চারাপোনা পাওয়া যায়।
যোগাযোগের টীকানা
পেটলাবাজার
থানা- দিনহাটা,
জেলা-কুচবিহার
ফোন- ৮৩৪৩৮৮৯৪২৪(মিটু)
৮৫১৪০২৯১৫৪(মিলু)
৭৫৫০৮৭২৪৮৪(শাহারুক)
Google map
মাছ চাষের জন্য page টি follow করুন
ধন্যবাদ
Thanks
উত্তরমুছুন