চুন দিন পুকুরে
পুকুরে মাছ চাষ করতে হলে নিয়মিত চুন দিতে হয়।
•চুন পুকুরের তলার মাটি ও জলের অম্ল ভাব দূর করে ক্ষার ভাব আনে— যা মাছের বাড়ে দরকার।
•চুন প্রয়োগে পুকুরে জৈব পদার্থের পচনক্রিয়া দ্রুত হওয়ায় ব্যবহারযোগ্য নাইট্রোজেনের পরিমাণ বাড়ে ও পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাদ্যকণা জন্মায়।
•ফসফেট আবদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হয়। উদ্ভিদকণার বৃদ্ধির জন্য জরুরি।
•চুন ব্যবহারে পুকুরে অ্যালকালিনিটি বাড়ে এবং এই চুন বাফার হিসাবে কাজ করে। ফলে পুকুরের জলের সকাল ও বিকালে পিএইচ পার্থক্য খুব বেশি হয় না—যা মাছ চাষের পক্ষে ভাল।
•পুকুরে ক্যালসিয়াম বাড়ে।
•চুন জলের ঘোলাটে ভাব দূর করে পরোক্ষ ভাবে জলে অক্সিজেন বাড়াতে সাহায্য করে।
•চুন রোগজীবাণু ধ্বংস করে।
•পুকুরের ক্ষতিকর গ্যাস দূর করে।
পুকুরের জলের ও পাঁকের অম্লত্ব যত বেশি হবে, তত বেশি চুন প্রয়োগ করতে হবে। অতি আম্লীয় (৪.০-৫.০ পিএইচ) হলে বছরে প্রতি হেক্টরে ২০০০ কেজি, অল্প আম্লীয় হলে (৫.১-৬.৫ পিএইচ) ১০০০ কেজি, প্রায় প্রশমিত (৬.৬-৭.৫ পিএইচ) হলে ৫০০ কেজি, অল্প ক্ষারীয় হলে (৭.৬-৮.৫ পিএইচ) ২০০ কেজি। পিএইচ ৮.৫ এর বেশি হলে চুন প্রয়োগের দরকার নেই।
শুকনো পুকুরের ক্ষেত্রে বর্ষার আগে পুরোটায় ছড়িয়ে দিয়ে লাঙল দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে ফেলতে হয়।
জল থাকা পুকুরে নিয়মটা অন্য। তিন-চার ঘণ্টা আগে চুন জলে ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে। এরপর ওই দ্রবণ নৌকা বা বড় কোনও পাত্রের সাহায্যে পুকুরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দিতে হবে। চুন দেওয়ার পর জাল ব্যবহার করে জল ঘেঁটে দেওয়া উচিত। পুকুরে একবার চুন দিয়েই কাজ শেষ হয়ে যায় না। প্রতি মাসেই পরিমাণ মতো চুন প্রয়োগ করতে হয়। তবে চুন খুব সকালের দিকে প্রয়োগ করতে হবে, বিকেলে নয়।