রক্তের উপাদান কয়টি ও কি কি

  রক্তের উপাদান (Composition of blood) 


রক্ত প্রায় 55% জলীয় উপাদান অর্থাৎ প্লাজমা এবং 45% কোষীয় উপাদান অর্থাৎ রক্তকোষ বা রক্তকণিকা নিয়ে গঠিত। প্লাজমাতে বিভিন্ন রকম জৈব ও অজৈব বস্তু থাকে। রক্তে তিন ধরণের রক্তকোষ বা রক্তকণিকা থাকে, যেমন : লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা এবং অণুচক্রিকা । 

     

  শ্বাস রঞ্জক (Respiratory pigments ) : 

■ হিমোগ্লোবিন : 
এই প্রসঙ্গে বলা যায় যে, হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতিতেই রক্ত লাল বর্ণ ধারণ করে। হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সঙ্গে মিশে অক্সিহিমোগ্লোবিন যৌগ গঠন করে অক্সিজেন পরিবহন করে। অপরপক্ষে কার্বন ডাই-অক্সাইডের সঙ্গে হিমোগ্লোবিন যুক্ত হয়ে কার্বামিনো-হিমোগ্লোবিন যৌগ গঠন করে কার্বন ডাই-অক্সাইড পরিবহন করে।

রক্তস্থিত যে সব রঞ্জক পদার্থ শ্বাস বায়ু ( O2 এবং CO2) পরিবহন করে তাদের শ্বাস রঞ্জক বলে। প্রাণীদের প্রধান শ্বাস রঞ্জক হল— হিমোগ্লোবিন ও হিমোসায়ানিন।

এটি বেশির ভাগ প্রাণীর প্রধান শ্বাস রঞ্জক। এটি ‘হিম’অর্থাৎ লৌহ এবং ‘গ্লোবিন' অর্থাৎ প্রোটিন উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত এক রকমের ক্রোমোপ্রোটিন। এটি কেঁচো, জোঁক ইত্যাদি প্রাণীর রক্তরসে এবং মেরুদণ্ডী প্রাণীদের লোহিত রক্তকণিকায় থাকে।

■ হিমোসায়ানিন :

 এটি চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি প্রাণীর শ্বাস রঞ্জক, যা কেবল রক্ত রসে অবস্থান করে। এটি তামা এবং প্রোটিনের সমন্বয়ে গঠিত এক রকমের ক্রোমোপ্রোটিন। 



 রক্তের কাজ (Function of Blood) :

■ রক্তের প্রধান কাজগুলি হল:

  • 1. পরিবহনের মাধ্যম : রক্তের মাধ্যমে পুষ্টিদ্রব্য, ভিটামিন, অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, হরমোন এবং বিপাকজাত দূষিত পদার্থ সমূহ পরিবাহিত হয়।

  • ● 2. রক্ততঞ্চন : রক্ত তার তঞ্চন ধর্মের সাহায্যে আঘাতপ্রাপ্ত স্থান থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে। রক্তে থাকা প্রোথ্রমবিন, ক্যালসিয়াম আয়ন এবং অণুচক্রিকা থেকে ক্ষরিত থ্রম্বোপ্লাসটিনের সহায়তায় রক্ত তঞ্চিত হয়।

  • 3. অনাক্রম্যতা : রক্তের লিম্ফোসাইট শ্বেতকণিকা অ্যান্টিবডি সৃষ্টি করে দেহে রোগজীবাণু প্রতিরোধ করে এবং অনাক্রম্যতা গড়ে তোলে।

  • O 4. প্রতিরক্ষা : রক্তের শ্বেতকণিকা বিশেষ করে মনোসাইট ও নিউট্রোফিল দেহে প্রবিষ্ট রোগজীবাণুদের ধ্বংস করে দেহকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।

  • 05. তাপ নিয়ন্ত্রণ : শ্বসনে উৎপন্ন তাপকে রক্ত সারা দেহে ছড়িয়ে দেয় বলে দেহ উষ্ণ থাকে। আবার দেহের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে রক্ত দ্রুত দেহের পরিধিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং তাপ মোচন করে, ফলে দেহের তাপমাত্রা  বজায় থাকে । 

 রক্তের বিভাগ (Blood group):

বিজ্ঞানী ল্যাওস্টেইনার মানুষের রক্তকে চারটি বিভাগ বা গোষ্ঠীতে ভাগ করেছেন। রক্তের গ্রুপ বা বিভাগগুলি হল: A, B, AB এবং O। রক্ত কণিকায় অবস্থিত দু'রকমের অ্যান্টিজেন (A ও B) এবং রক্তরসে অবস্থিত দু'রকমের অ্যান্টিবডির (Aও B) উপর নির্ভর করে রক্তের গ্রুপ বা শ্রেণী বিভাগ করা হয়েছে।
সাধারণত রক্তের সমবিভাগ সম্পন্ন লোকদের মধ্যে রক্তের আদান-প্রদান চলতে পারে। তবে 'O' বিভাগের রক্তে কোনও রকম অ্যান্টিজেন না থাকায় 'O' বিভাগ সব বিভাগকে রক্ত দান করতে পারে। তাই 'O' বিভাগকে ‘সার্বিক দাতা'বলে। অপরপক্ষে, AB বিভাগের রক্তে কোনও রকম অ্যান্টিবডি না থাকায় AB বিভাগ সব বিভাগের কাছে রক্ত গ্রহণ করতে পারে। তাই AB বিভাগকে ‘সার্বিক গ্রহীতা' বলে।



Shaharuk Islam

Hi I am Shaharuk Islam. I enjoyed in writing articles and spread knowledge cross over the internet.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

Ad

Magspot Blogger Template

Ad

amazon.in
amazon.in

نموذج الاتصال