• ভালো দুধেলো গাই নির্বাচন :
যে গাইগোরু গড়ে দিনে কম করে ৬-৭ কেজির দুধ দেবে তাকে আমরা দুধেনো গাই বলে গণ্য করব। ২-৩ কেজি দুধ দেওয়া গাই পুষে অর্থনৈতিক দিক থেকে লাভবান হওয়া যায় না। তাই কোনো গাইগোরু ঠিক কতটা দুধ দেবে তা মোটামুটি চারটি নীতির ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন করা সম্ভব যথা :
১। জাতঃ জাত দেখে গোরু নির্বাচন করাই ভালো। যেমন সাইওয়াল, সিদ্ধি এবং বিদেশিদের বেলায় জার্সি, হলস্টাইন ফ্রেসিয়ান ইত্যাদি। ভারতীয় আবহাওয়ায় দেশি ও বিদেশির মিশ্রণে সংকর গোরুই ভালো।
২। বংশপঞ্জি : গাভীটির বংশপঞ্জিও দেখতে হবে। দেখতে হবে তার মা দুধ দিত বা তার বাবার বংশের গাইটাই বা কতটা দুধ দিত ইত্যাদি।
৩। দুধ দেওয়ার ক্ষমতার নথিপত্র : আগের বার বাচ্চা দেওয়ার পর পরবর্তী বাচ্চা দেওয়ার মধ্যবর্তী সময়ে মোট কতটা দুধ দিয়েছিল ইত্যাদি।
৪। পালানের গঠন : পালান হবে লম্বা ও চওড়ায় বড়ো। মনে রাখতে হবে দুধ দেওয়ার পর যেন পালান একেবারে চুপসে যায়। পালানের পিছন দিকটা অনেক উঁচু থেকে ঝুলবে। পালানের চারটি প্রকোষ্ঠই সমান মাপের হওয়া চাই। হাতে ধরে দেখলে পালান হবে নরম তুলতুলে এবং স্থিতিস্থাপকতা হবে অনেক বেশি। বাঁটগুলি সমান মাপের এবং সমান দূরত্বে অবস্থিত থাকবে। আবার বেশি লম্বা বাঁট ভালো নয়। পালানশিরা হবে লম্বাটে আঁকাবাঁকা সুস্পষ্ট শাখাপ্রশাখা যুক্ত ও মোটা।
রোগবিহীন দুধালো গাভী নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। পালান প্রদাহ বা ঠুনকো রোগ হয়েছিল কি না জানা অত্যন্ত জরুরি।
• ষাঁড় নির্বাচন :
দুধেলো গাভী নির্বাচনের মতোই ষাঁড় নির্বাচন করতে হয় পরবর্তী প্রজন্মে ভালো দুধেলো গাই পাওয়ার জন্য। এর জন্যও কতকগুলি চরিত্রের ওপর বিশেষ জোর দিতে হয়।
১। জন্মপঞ্জি : দেখতে হবে তার মা বা বোনেরা কেমন দুধ দিত বা দেয়।
২। সাধারণ গঠন : শৌর্যশালী, শক্তিমান চেহারা ও টানটান দেহ। জাত হিসাবে তার গায়ের রং ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে। তার শিং-এর গড়ন খাঁজ-এর গঠনও দেখতে হবে।
৩। মাথা : সুগঠিত মাথা শরীরের সঙ্গে সাম্যস্যপূর্ণ হতে হবে। উপরের ঠোঁট ও নাক চওড়া, বড়ো নাসারন্ধ্র, চোয়াল শক্ত সামর্থ্য, বড়ো উজ্জ্বল চোখ, চওড়া কপাল।
৪। কাঁধের হাড় : মসৃণ শক্তভাবে শরীরের সাথে আটকানো থাকতে হবে।
৫। পিঠ : শক্ত সামর্থ্য ও সোজা।
৬। কটি ও কোমর : চওড়া ও সমতল।
৭। পাছা ঃ লম্বা, চওড়া ও পাছার হাড়ের সাথে আনুভূমিক ভাবে বিস্তৃত, পাছা সব সময় টান টান হবে।